এসএসসি পরামর্শ : ভালো প্রস্তুতির জন্য যা দরকার
এসএসসি পরীক্ষা জীবনস্বপ্নের প্রথম সিঁড়ি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, দৃঢ় মনোবল, মানসিক প্রস্তুতি ও অনুশীলনের একত্রীকরণে একজন ছাত্র আসন্ন পরীক্ষায় নিজের ওপর আস্তা বাড়াতে সক্ষম হয়।
পরীক্ষার প্রস্তুতি : পরীক্ষার বিষয়গুলোর প্রশ্নের ধারা ও মানবণ্টন সম্পর্কে সঠিক ধারণা নিয়ে নেবে। প্রয়োজনে বিষয়থ শিক্ষকের সহায়তা নেবে।
না বুঝে কোন বিষয় মুখস্থ করবে না। প্রতিটি বিষয় ভালোভাবে বোঝার চেষ্টা করবে যাতে পরীক্ষার সময় নিজে বাক্য তৈরি করে চাহিদা মোতাবেক উত্তর করতে পারো।
বাংলা প্রথম পত্র এবং ধর্মশিক্ষা বিষয়ের পরীক্ষা সৃজনশীল পদ্ধতিতে হবে। এ দুই বিষয়ের প্রশ্ন পাঠ্যবই থেকে হুবহু কমন নাও পড়তে পারে, তবে পাঠ্যবইয়ের বিষয়বস্তু থেকে প্রশ্ন হবে। তাই পাঠ্যবইয়ের প্রতিটি পাঠ মনোযোগের সঙ্গে পড়ে পুরোপুরি আয়ত্তে আনতে হবে। এতে পরীক্ষার সময় যেকোন প্রশ্নেরই উত্তর দেয়া সম্ভব হবে।
ইংরেজি প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, গণিত (আবশ্যিক) ও উচ্চতর গণিত বিষয় ছাড়া অন্য বিষয়ে নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্নের উত্তর করতে হয়। জিপিএ-৫ পাওয়ার জন্য নৈর্ব্যক্তিক অংশ থেকে পুরো নম্বর তুলতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পুরো পড়তে হবে এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য রঙিন কলম (মার্কিং পেন) দিয়ে চিহ্নিত করবে যাতে পরীক্ষার আগের রাতে চিহ্নিত তথ্যগুলো দেখে যেতে পার।
গণিত (আবশ্যিক), উচ্চতর গণিত ও হিসাববিজ্ঞান বিষয়ের প্রস্তুতির জন্য পাঠ্যবইয়ের অঙ্কগুলো বারবার অনুশীলন করবে। টেস্ট পেপার থেকে বিভিন্ন বোর্ডের অধীন গুরুত্বপূর্ণ বিদ্যালয়গুলোর পরিবর্তিত অঙ্কগুলো অনুশীলন করবে। উপপাদ্য ও সম্পাদ্যগুলো খাতায় লিখে বারবার অনুশীলন করবে। মনে রাখবে, উপপাদ্যের প্রমাণের কোন অংশে এবং সম্পাদ্যের চিত্রাঙ্কনে ভুল হলে কোন নম্বর পাবে না। চিত্রাঙ্কনে সূক্ষ্ম পেনসিল ব্যবহার করবে কোন রকম ঘষামাজা করবে না।
পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নবিজ্ঞান এবং জীববিজ্ঞানের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় চিত্র ও চিত্র চিহ্নিত করা নির্ভুলভাবে দিতে হবে। পরীক্ষায় গাণিতিক সমস্যা, সমীকরণ প্রতিপাদন এবং চিত্র সংবলিত প্রশ্নগুলোর উত্তর করার চেষ্টা করবে। তোমাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। এ জন্য লেখাপড়ার ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিতে হবে। বেশি রাত জেগে অতিরিক্ত পড়াশোনা করবে না। সুস্থ থাকার জন্য কমপক্ষে ছয় ঘণ্টা (১২টা থেকে ৬টা পর্যন্ত) ঘুমাবে।
পরীক্ষার আগের রাতের প্রস্তুতি : পরীক্ষার আগের রাত খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওই রাতে প্রতিটি মিনিটের ওপর গুরুত্ব দেবে। পরীক্ষার সময়সূচি দেখে পরের দিনের বিষয় ভালোভাবে বারবার পাঠ করবে। কোন অবস্থাতেই ওই রাতে বেশি (রাত ১১টার পরে) সময় জেগে থাকবে না।
ঘুমাতে যাওয়ার আগেই পরীক্ষার প্রবেশপত্র, একাধিক কলম, পেনসিল, রাবার, রুলার, হাতঘড়ি, জ্যামিতি বক্স গুছিয়ে রাখবে। যাতে পরীক্ষার হলে যাওয়ার সময় খোঁজাখুঁজি করতে না হয়।
পরীক্ষার আগের রাতে ভালো ঘুম হওয়া দরকার।
পরীক্ষার দিন এবং পরীক্ষাকক্ষে করণীয় : মনে রাখবে, প্রথম দিন পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে কেন্দ্রে উপস্থিত হতে হবে। পরীক্ষা শুরুর আগে অনেকে ঘাবড়ে যায়। এ সময় নির্ভয় ও আত্মবিশ্বাসী থাকতে হবে। পরীক্ষার খাতা হাতে পেলে সব পৃষ্ঠা গুনে নিয়ে তার মধ্যে কোন কাটা, ছেঁড়া অথবা আর্দ্রতায় ভেজা পাতা থাকলে সেই খাতা বদলে নিতে হবে। অতঃপর প্রথম পৃষ্ঠায় রেজিস্ট্রেশন নম্বর, রোল নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি তথ্য সঠিকভাবে লিখবে এবং সংশ্লিষ্ট বৃত্ত পেনসিল দিয়ে চিহ্নিত করে নিশ্চিত হয়ে বলপয়েন্ট কালো কলম দিয়ে ভরাট করবে। এগুলো লেখার সময় প্রবেশপত্রের সাহায্য নেবে। স্মৃতিশক্তির ওপর নির্ভর করে কখনো লিখবে না। বৃত্ত ভরাটে ভুল হলে সঙ্গে সঙ্গে তা কক্ষ পরিদর্শককে জানাবে। এরপর উত্তরপত্রে মার্জিন টানবে এবং পৃষ্ঠা নম্বর দেবে।
প্রশ্নপত্র হাতে পাওয়ার পর সেটি ভালো করে পড়ে নেবে। মনে রাখবে, প্রশ্ন নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে প্রশ্নগুলোর উত্তর নির্ভুলভাবে দেয়া সম্ভব, সেগুলো নির্বাচন করে উত্তর লেখা শুরু করবে। উত্তরপত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখবে। সতর্ক থাকবে যেন যথাসময়ে সব উত্তর লিখে শেষ করতে পার। অতিরিক্ত উত্তরপত্র নিলে তার ক্রমিক নম্বর মূল উত্তরপত্রের প্রথম পৃষ্ঠায় নির্ধারিত স্থানে লিখে সংশ্লিষ্ট বৃত্ত ভরাট করবে। নৈর্ব্যক্তিক উত্তরপত্র (ওএমআর শিট) পাওয়ার পর নির্ধারিত স্থানে রোল নম্বর, রেজি : নম্বর, বিষয় কোড লিখে সংশ্লিষ্ট বৃত্ত বলপয়েন্ট কালো কলম দিয়ে ভরাট করবে। মনে রাখবে, সেট কোডের বৃত্ত ভরাটে ভুল হলে তা সংশোধনের সুযোগ নেই। তাই সেট কোড প্রশ্নপত্র পাওয়ার পর প্রশ্নপত্র দেখে লিখবে এবং সংশ্লিষ্ট বৃত্ত ভরাট করবে। এ ক্ষেত্রে কোন প্রকার ভুল হলে সঙ্গে সঙ্গে তা কক্ষ পরিদর্শককে জানাবে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার ১৫ মিনিট আগে উত্তর লেখা শেষ করতে হবে। শেষ ১৫ মিনিটে উত্তরপত্র ভালো করে পড়ে নেবে এবং কোন ভুল থাকলে সংশোধন করে নেবে।
অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ : এ সময় বেশি কর্তৃত্ব না করে তাদের ইচ্ছা ও স্বাধীনতার প্রতি উদার হবেন। তাদের শারীরিক ও মানসিক চাহিদা মেটাতে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিন। প্রয়োজনে তাদের সঙ্গে রাত জাগুন, তাদের কষ্ট উপলব্ধি করে ভাগ করে নিন। এ মুহূর্তে শিক্ষকের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে ছাত্রছাত্রীর অনুশীলনের দিকে প্রতিটি পরিবারের মনোযোগী হওয়া দরকার।
ভুলে ভরা জীবনে ভুল হওয়াটা অসম্ভব কিছু নয়,যদি আমার লেখার মাঝে কোন ভুলত্রুটি থাকে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ সবাই ভাল থাকবেন।
আপনার কম্পিউটার সমস্যা সমাধানে আমরা আছি ফেইজবুকে: পিসি হেল্প সেন্টার
সাইট টু: পিসি হেল্প সেন্টার
Posted on 18/01/2012, in লেখাপড়া / শিক্ষা and tagged লেখাপড়া, শিক্ষা. Bookmark the permalink. 3 টি মন্তব্য.
ভাই আমি একজন SSC পরীক্ষার্থী।আপনার সম্পূর্ণ ওয়েব দেথে আপনাকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারছি না।আপনার প্রচেষ্টা চালিয়ে যান আল্লাহ আপনার সহায় হবেন।অমি আপনার ওয়েব সাইটে একটি বিজ্ঞাপন দিতে চাই।আমাকে কি কি করতে হবে জানিয়ে মেইল করুন: bdmon24@gmail.com
মনির উদ্দিন তামিম ভাই ধন্যবাদ কমেন্ট এর জন্য এবং আমাকে উৎসহ করার জন্য আরো অগনিত ধন্যবাদ। আপনার বিজ্ঞাপনের জন্য আমি ইমেইলে আপনার সাথে যোগাযোগ করেতেছি।
মনির উদ্দিন তামিম ভাই আপনাকে ই-মেইল পাঠানো হয়েছে একটু দেখুন।